মঙ্গলবার; ০৬ মে ২০২৫; ২২ বৈশাখ ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে বেকায়দায় অ্যাপল ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে বেকায়দায় অ্যাপল

-ইনফোটেক ইনসাইট ডেস্ক

Published : ১৮:০৩, ২১ এপ্রিল ২০২৫

আইফোনেই লেখা থাকে ডিজাইন্ড বাই অ্যাপল ইন ক্যালিফোর্নিয়া তবে এই প্রযুক্তিপণ্যের প্রকৃত জন্ম স্থান কিন্তু চীনে। অ্যাপলের আইফোন, আইপ্যাড বা ম্যাকবুক সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় চীনে।

বিশ্বে বছরে ২২ কোটির বেশি আইফোন বিক্রি করে অ্যাপল। এরমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি তৈরি হয় চীনে। আইফোনের স্ক্রিন, ব্যাটারি, চিপ ইত্যাদির গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলো সংগ্রহ, প্রস্তুত এবং সংযোজন হয় চীনেই। তারপর এগুলো যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।

সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন হঠাৎ করে স্মার্টফোন, কম্পিউটারসহ কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যে শুল্ক অব্যাহতি দেয়। আপাতত অ্যাপল স্বস্তি পেলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফের কড়া গলায় বলেছেন, কেউই ছাড় পাবে না।

এই ব্যবস্থাটি এতদিন অ্যাপলের শক্তি হিসেবে বিবেচিত হলেও এখন সেটাই বড় দুর্বলতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্পের শুল্কনীতি এক রাতেই পাল্টে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের অর্থনৈতিক সম্পর্ক।

৯০-এর দশকে যখন অ্যাপল প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়েছিল এবং দেউলিয়া হওয়ার পথে, তখনই চীনের উন্মুক্ত অর্থনীতি ছিল তাদের জন্য জীবনরক্ষাকারী। ২০০১ সালে সাংহাইয়ের এক কোম্পানির মাধ্যমে চীনে প্রবেশ করে অ্যাপল। তারপর থেকে ফক্সকনের মতো চীনে কার্যরত তাইওয়ানের প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় শুরু হয় আইপড, আইম্যাক এবং পরে আইফোন তৈরির কাজ।

অ্যাপল চীনে নিজের মতো করে গড়ে তুলেছে ম্যানুফ্যাকচারিং সুপারস্টার। ২০০৮ সালে অলিম্পিকের বছর বেইজিংয়ে অ্যাপলের প্রথম স্টোর চালু হয়। এরপর ৫০টির বেশি শাখা ছড়িয়ে পড়ে চীনের বিভিন্ন শহরে। বর্তমানে আইফোনের অধিকাংশই উৎপাদন করে ফক্সকন। মূল চিপ আসে তাইওয়ান থেকে। আর এসবের জন্য প্রয়োজনীয় দুর্লভ খনিজ মজুত রয়েছে চীনের হাতে। ২০২৪ সালের হিসাবে, অ্যাপলের ১৮৭ গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহকারীর মধ্যে ১৫০-এর কারখানা রয়েছে চীনে।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জানিয়েছেন, অ্যাপলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব আমেরিকায় উৎপাদন শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অ্যাপলের সাবেক উপদেষ্টা ইলাই ফ্রিডম্যান বলেন, ২০১৩ সালে চীন থেকে সরবরাহ ব্যবস্থার বিকল্প নিয়ে ভাবছে অ্যাপল, তবে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই বিকল্প ছিল না। বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে ভিয়েতনাম ও ভারতের নাম। অ্যাপলকে কেন্দ্র করে চীনের হাজারো কারখানায় লাখ লাখ কর্মসংস্থান। এই শক্তি হারানো চীনের জন্য বড় আঘাত।

অ্যাপলের এয়ারপডস ভিয়েতনামে তৈরি হচ্ছে, যদিও সেই দেশও ৪৬ শতাংশ শুল্কের মুখে। ফ্রিডম্যান বলেছেন, ফক্সকনের মতো বিশাল কর্মী বিশিষ্ট কারখানার জন্য এখনও এশিয়ার দেশগুলোই একমাত্র বিকল্প, যাদের সবার ওপরই শুল্ক চাপছে।

অ্যাপল যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা ট্রাম্পকে কতটা খুশি করবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

এমএএইচ

শেয়ার করুনঃ