সিক্স-জি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করছে চীন
Published : ১৭:০২, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫
চীনের সিক্স-জি প্রযুক্তি এখন আর ভবিষ্যতের গল্প নয়। ল্যাবের বাইরে বাস্তব দুনিয়ায় দ্রুত এগোচ্ছে এর ব্যবহারিক প্রয়োগ। চিয়াংসুর নানচিংয়ে পার্পল মাউন্টেন ল্যাবরেটরিতে ড্রোন থেকে শুরু করে রোবট— সবকিছুতেই চালানো হচ্ছে সিক্স-জি’র পরীক্ষামূলক ব্যবহার। ইতোমধ্যে প্রথম ধাপের ট্রায়াল শেষ করে সিক্স-জি প্রযুক্তিতে তিন শতাধিক প্রযুক্তিগত সাফল্যও অর্জন করেছে চীন।
একটি ফুটবল মাঠের সমান এই জায়গায় ড্রোন ও রোবট পরীক্ষার আলাদা জোন রয়েছে। চারপাশে স্থাপিত আছে স্মার্ট অ্যান্টেনা। এগুলো একই সঙ্গে যোগাযোগ ও সেন্সিং—দুটো কাজই করতে পারে।
গবেষকদের মতে, আগে ড্রোন ব্যবহারে যোগাযোগ ও রাডার দুটো আলাদা সিস্টেম লাগত। কিন্তু সিক্স-জিতে এই দুই প্রযুক্তি এখন একটি ডিভাইসেই একীভূত হচ্ছে।
জরুরি যোগাযোগ, সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ এবং দূরপাল্লার মনিটরিংয়ে এর বড় সুফল মিলবে। আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই এই সমন্বিত প্রযুক্তির ক্ষেত্রভিত্তিক ব্যাপক ব্যবহার শুরু হতে পারে।
পার্পল মাউন্টেন ল্যাবরেটরিজ সহ গবেষক লিউ চেনিং জানালেন, ‘সিক্স-জি প্রথমবারের মতো শিল্প উৎপাদনের সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও গুরুত্বপূর্ণ তারযুক্ত নিয়ন্ত্রণকে ওয়্যারলেস সিস্টেমে প্রতিস্থাপন করবে। এটি শুধু তারবিহীন প্রযুক্তির নয়, পুরো শিল্প মডেলেই নিয়ে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন।’
থাইহু লেকের কাছে একটি সিক্স-জি ট্রায়াল নেটওয়ার্কযুক্ত জরুরি যোগাযোগ যান ইতোমধ্যেই টেস্ট পরিচালনা করছে। সিক্স-জি ড্রোন ৩০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে নিরবচ্ছিন্ন এইচডি ভিডিও পাঠাতে পারছে— যেখানে ফাইভ-জি ড্রোন সংযোগ হারায়। একটি সিক্স-জি বেস স্টেশন ফাইভ-জি’র তুলনায় ১০ গুণ বেশি এলাকা কভার করতে পারে।
এদিকে, চীনের শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রথম ধাপের সিক্স-জি ট্রায়ালে ৩০০টির বেশি মূল প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। পার্পল মাউন্টেন ল্যাবে দেখা গেছে সিক্স-জি-নিয়ন্ত্রিত রিয়েল-টাইম ‘বাউন্ডেড-ল্যাটেন্সি’ পরীক্ষায় একটি পিং-পং বলকে নিখুঁত বৃত্তে ঘোরানো হচ্ছে।
গবেষকদের মতে, সিক্স-জি প্রথমবারের মতো অত্যন্ত সূক্ষ্ম শিল্প নিয়ন্ত্রণের তারযুক্ত সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করবে, মেশিনের মধ্যে মাইক্রোসেকেন্ড-স্তরের সমন্বয় এনে গড়ে তুলবে পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় কারখানা।
ইনস্টিটিউট ফর ওয়্যারলেস অ্যান্ড মোবাইল কমিউনিকেশনস টেকনোলজির উপ পরিচালক তু ইয়িং জানালেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বৃহৎ পরিসরে সিক্স-জি মোতায়েনের সক্ষমতা অর্জন করব। ২০৩৫ সালের দিকে সিক্স-জি-এর বড় আকারের বাণিজ্যিক ব্যবহার সম্ভব, যা ট্রিলিয়ন-ইউয়ান শিল্পের একটি বাস্তুসংস্থান তৈরি করবে।’
চীন ১৫তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সময়ে সিক্স-জি মান উন্নয়ন ও শিল্পায়নে গুরুত্ব দেবে। ২০৩০ সালের দিকে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যিক প্রয়োগ শুরু হতে পারে এ প্রযুক্তির।
সূত্র: সিএমজি
এমএএইচ
















