.png)

অনলাইনে ব্যাংক হিসাব খোলার সুবিধা বন্ধ হওয়ার উপক্রম
Published : ১৩:০১, ২৪ জুলাই ২০২৫
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) স্টোরেজে নাগরিকদের তথ্য যাচাইয়ের সুবিধা সীমিত করায় ব্যাংকগুলোর অনলাইনে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের হিসাব খোলার কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে প্রবাসীদের জন্য দেশের ব্যাংকগুলোতে হিসাব খোলার সুযোগও বন্ধ রয়েছে। এমনকি সনাতন পদ্ধতিতে হিসাব খুলতেও গ্রাহকদের ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন জাতীয় তথ্যভাণ্ডার পরিচালনা করে। একাধিকবার তথ্য ফাঁসের ঘটনার পর তথ্যভাণ্ডারের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা জোরদার করতে, সাইবার হুমকি মোকাবিলায় এবং তথ্যের অপব্যবহার রোধে নাগরিকদের তথ্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সীমিত করার উদ্যোগ নেয় কমিশন। চলতি সপ্তাহে অনেক ব্যাংকের সার্ভারে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (এপিআই) মাধ্যমে শুধু নাম, জন্মতারিখ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) শুধু এই তথ্যের ভিত্তিতে হিসাব খোলার অনুমতি দিচ্ছে না। এপিআইয়ের বাকি তথ্য বাংলা ভাষায় থাকায় ব্যাংকগুলো সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাচাই করতে পারছে না, যা থেকে সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন, বিএফআইইউ এবং ব্যাংকগুলো একাধিকবার বৈঠক করেছে তবে কোনও সমাধান হয়নি সমস্যার।
দেশের বেশির ভাগ ব্যাংক সনাতন পদ্ধতির পাশাপাশি অনলাইনে তাৎক্ষণিক হিসাব খোলার সুবিধা দিয়ে থাকে। এর জন্য ব্যাংকগুলোর নিজস্ব অ্যাপও রয়েছে।
বিভিন্ন ব্যাংকের শীর্ষ কর্তারা বলছেন, অনলাইনে পরিচয়পত্র যাচাই করতে না পারায় তাৎক্ষণিকভাবে হিসাব খোলা যাচ্ছে না। এখন সনাতন পদ্ধতিতে যাচাই করতে হচ্ছে, যা সময়সাপেক্ষ।
২০০৭ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়, যার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি সার্ভারে তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল ব্যাংকিং সেবা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানগুলো এই তথ্যভাণ্ডার থেকে গ্রাহকের বিস্তারিত তথ্য যাচাই করে হিসাব খুলত। ২০২০ সালে বিএফআইইউ ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি (ই-কেওয়াইসি) নীতিমালা প্রণয়ন করে, যেখানে বলা হয়, গ্রাহকের নাম, পিতা-মাতার নাম এবং আঙুলের ছাপ ৮০ শতাংশের কম বা সমান হলে এবং জন্মতারিখ ও পরিচয়পত্র নম্বর শতভাগ মিললে হিসাব খোলা যাবে। এর ফলে ব্যাংক ও এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলো তাৎক্ষণিক হিসাব খোলার সেবা চালু করে, যা দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্যও হিসাব খোলার প্রক্রিয়া সহজ করে এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এ বিষয়ে গত ৪ জুন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংকগুলো থেকে প্রাপ্ত আট ধরনের তথ্য পুরোপুরি মিললে এপিআইয়ের মাধ্যমে ছবি এবং ১০ ও ১৭ ডিজিটের পরিচয়পত্র নম্বরের তথ্য দেওয়া হবে। ব্যাংকগুলো অনুরোধ করেছে, ইংরেজিতে গ্রাহকের নাম, পরিচয়পত্র নম্বর এবং জন্মতারিখ মিললেই সম্পূর্ণ তথ্য সরবরাহ করা হোক এবং আঙুলের ছাপ মেলানোর সুবিধা পুনরায় চালু করা হোক।
এমএএইচ