সোমবার; ০৬ অক্টোবর ২০২৫; ২১ আশ্বিন ১৪৩২

পৃথিবীতে অক্সিজেনের ইতিহাস জানালেন চীনা বিজ্ঞানীরা ছবি- সংগৃহীত

পৃথিবীতে অক্সিজেনের ইতিহাস জানালেন চীনা বিজ্ঞানীরা

-ইনফোটেক ইনসাইট ডেস্ক

Published : ১৮:০৫, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চীনা বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, গত ২০০ কোটি বছরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে তিনটি বড় অক্সিজেন বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছে। এতে করে পৃথিবী অক্সিজেনসমৃদ্ধ পরিবেশে রূপ নেয়, যা জীবনের উদ্ভব, বিবর্তন ও দীর্ঘমেয়াদি বাসযোগ্যতা নিয়ে দিচ্ছে নতুন ধারণা।

সম্প্রতি ছেংতু ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ও নানচিং ইউনিভার্সিটির গবেষকদের নেতৃত্বে পরিচালিত এ গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে নেচার জার্নালে। গবেষণায় স্তরীভূত শিলায় আটকে থাকা সালফেটের ট্রিপল অক্সিজেন আইসোটোপের রেকর্ড বিশ্লেষণ করা হয়।

ছেংতু ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির সেডিমেন্টারি জিওলজি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লি চাও বলেন, আমাদের গবেষণা প্রথমবারের মতো সরাসরি প্রমাণ দিয়েছে যে প্রায় ৪১ কোটি বছর আগে পৃথিবীর অক্সিজেন এখনকার মাত্রায় পৌঁছেছিল। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীর পৃষ্ঠের তিন ধাপের অক্সিজেনেশনের প্রক্রিয়া নিশ্চিত হলো।

তিনি ব্যাখ্যা করেন, অক্সিজেনের তিনটি স্থিতিশীল আইসোটোপ রয়েছে। প্রকৃতিতে এদের অনুপাত স্থির নয়, বরং বায়ুমণ্ডল ও মহাসাগরের জৈব-ভূ-রাসায়নিক প্রক্রিয়ার কারণে সামান্য পরিবর্তিত হয়।

এ সূক্ষ্ণ পরিবর্তনগুলোকে পৃথিবীর আঙুলের ছাপ হিসেবে ধরে নিয়ে বিজ্ঞানীরা প্রাচীন পৃথিবীর পরিবেশগত বিবর্তন নির্ধারণ করতে পারেন।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথম অক্সিজেন বৃদ্ধি ঘটেছিল প্যালিওপ্রোটেরোজোয়িক যুগে (২৪০২১০ কোটি বছর আগে), দ্বিতীয়টি নিওপ্রোটেরোজোয়িক যুগে (প্রায় ১০০ কোটি বছর আগে) এবং তৃতীয়টি প্যালিওজোয়িক যুগে (প্রায় ৪৪ কোটি বছর আগে)।

গবেষণায় দেখা গেছে পৃথিবীতে অক্সিজেন প্রায় শূন্য থেকে ধাপে ধাপে বেড়ে ৪১ কোটি বছর আগে আধুনিক স্থিতিশীল অবস্থায় পৌঁছায়। এ প্রক্রিয়া প্রায় ২০০ কোটি বছর ধরে চলে।

এ ছাড়া নিওপ্রোটেরোজোয়িক যুগে কার্বন, সালফার ও অক্সিজেন আইসোটোপে তীব্র পরিবর্তন দেখা যায়, যা প্রমাণ করে যে বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন বৃদ্ধির পর তা বারবার অক্সিজেন-স্বল্প মহাসাগরকে অক্সিডাইজ করেছিল।

লি চাও বলেন, এই গবেষণা জটিল ইউক্যারিওটিক জীবের ধাপভিত্তিক বিবর্তন বোঝার জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করেছে। একইসঙ্গে বাসযোগ্য গ্রহের গঠন ও প্রাচীন হাইড্রোকার্বন উৎস শিলা অনুসন্ধানে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দিচ্ছে।

সূত্র: সিএমজি

এমএএইচ

শেয়ার করুনঃ