শুক্রবার; ২০ জুন ২০২৫; ৬ আষাঢ় ১৪৩২

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান, ১১০০ এজেন্ট শনাক্ত ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান, ১১০০ এজেন্ট শনাক্ত

-ইনফোটেক ইনসাইট ডেস্ক

Published : ১৬:২৪, ২৬ মে ২০২৫

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতোমধ্যে জুয়ার সাথে জড়িত প্রায় ১,১০০ মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) আইসিটি বিভাগ থেকে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি  জানানো হয়, সরকার সাইবার স্পেসে জনস্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে নতুন সাইবার সুরক্ষা বাংলাদেশ জারি করেছে। অধ্যাদেশের ২০ ধারা অনুসারে জুয়া খেলা এবং জুয়া খেলার সাথে জড়িত সকল কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়েছে । এই আইন অনুসারে সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার জন্য কোনও পোর্টাল, অ্যাপস, ডিভাইস তৈরি বা পরিচালনা করা, জুয়া খেলা, খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান বা উৎসাহ প্রদানের জন্য বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রচার বা বিজ্ঞাপনের সাথে জড়িত থাকাকে আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ২১ এবং ২২ ধারা অনুযায়ী জুয়া খেলার জন্য কোনও আর্থিক লেনদেন, জুয়া খেলা বিষয়ে কোনও প্রতারণা বা জালিয়াতি করাকেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

জুয়া খেলা নিয়ে উৎসাহ প্রদান বা বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করার কারণে বাংলাদেশের কোন নাগরিকের জুয়া খেলা নিয়ে কোনও বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। কোনও নাগরিক,সম্মানিত ব্যক্তি বা সেলিব্রেটি যদি মনে করেন তার অনুমতি ব্যতিরেকে জুয়া খেলার ওয়েবসাইট, পোর্টালে তার ছবি বা ভিডিও ব্যবহৃত হচ্ছে তাকে আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

এই আইন প্রণয়নের আগে যারা জুয়া খেলার সাথে বা জুয়া খেলার বিজ্ঞাপনের সাথে স্বেচ্ছায় জড়িত ছিলেন তাদেরকে অবিলম্বে এই কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যারা আগে জুয়ার কারণে প্রতারণার শিকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য আইনের ৩০ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার দেশের জনগণকে সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা এবং জুয়া খেলা সংক্রান্ত যেকোনও কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার এবং এই অপরাধের সাথে যুক্ত ব্যক্তি বা কোম্পানির ব্যাপারে তথ্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে প্রদানের অনুরোধ করছে।

জুয়া একটি সামাজিক ব্যাধি এবং সাইবার স্পেসে জুয়া খেলার কারণে দেশে অসংখ্য ব্যক্তি সর্বস্বান্ত হয়েছে, অনেকে আত্মহত্যার পথও বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাই দেশের জনগণের কাছে সরকার সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা বন্ধ করার ব্যাপারে সর্বোচ্চ  সহযোগিতা প্রত্যাশা করছে। সরকার ইতিমধ্যে ১ হাজার ১০০ এর অধিক এজেন্ট শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এরূপ কার্যক্রমের সাথে যেসব মোবাইল ফাইন্যান্সিং এজেন্ট, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

যদি কোনও ব্যক্তি উল্লিখিত অপরাধ সংগঠিত করেন তবে তিনি অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এই বিষয়ে সরকারের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং সাইবারস্পেসে জুয়া খেলা, ফাইনানশিয়াল স্কাম, জুয়ার লেনদেনের (ক্রিপ্টোকারেন্সিসহ) সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তি, সেলিব্রেটি, বিভিন্ন পেশাজীবী, অপারেটর, মোবাইল ফাইনানশিয়াল সিস্টেম, এমএফএস এজেন্ট, ব্যাংক, বীমা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি অনলাইন জুয়ায় জড়িত  বিভিন্ন পেশাজীবী, বিজ্ঞাপনদাতা কোম্পানি, মিডিয়া বায়ার, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিজ্ঞাপনদাতা এবং বিজ্ঞাপন গ্রহীতা সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

অনলাইন জুয়ার বিরুদ্ধে সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তাই যেকোনও জুয়ার অ্যাকাউন্ট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দ্রুত রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।

সূত্র- জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি

এমএএইচ

শেয়ার করুনঃ