.png)

লেজার ইন্টারনেট কী, এটা ব্যবহার করে ফিলিপাইন কতটা সফল হলো?
Published : ১১:১৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ফিলিপাইনের দুই শীর্ষ টেলিকম কোম্পানি পিএলডিটি এবং গ্লোব সম্প্রতি একটি অভিনব ইন্টারনেট সংযোগ পদ্ধতি পরীক্ষার ঘোষণা দিয়েছে, যা ‘লেজার ইন্টারনেট’ নামে পরিচিত। এই প্রযুক্তি ডেটা স্থানান্তরের জন্য লেজার রশ্মি ব্যবহার করে, যাকে ‘লাইট ব্রিজ’ বা আলোর সেতু বলা হচ্ছে। লেজার ইন্টারনেট তারবিহীনভাবে এক টার্মিনাল থেকে আরেকটিতে আলোর মাধ্যমে ডেটা পাঠায়, যার দূরত্ব ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ১০০ কিলোমিটার দূরত্ব কাভার করতে হলে পাঁচটি টার্মিনালের মাধ্যমে একটি সংযুক্ত লাইনে ডেটা পাঠানো হবে।
একবার টার্মিনালগুলো সঠিকভাবে সারিবদ্ধ হলে, তারার লাইটব্রিজ প্রযুক্তি সক্রিয় ট্র্যাকিংয়ের জন্য গ্লাস বা আয়না ব্যবহার করে, যাতে লেজার রশ্মি সঠিকভাবে লক থাকে। এই পদ্ধতি দুর্গম ভূখণ্ড, পাহাড়, বা দ্বীপে তার বিছানোর জটিলতা এড়িয়ে যায়। তবে, এর দুর্বলতার মধ্যে রয়েছে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া বা অন্যান্য বাধা যা লেজার সংযোগে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
এই প্রযুক্তি, যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফ্রি স্পেস অপটিক্স (এফএসও) বলা হয়, এর ব্যান্ডউইথ ২০ গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে এবং রেডিও প্রযুক্তির মতো লাইসেন্সযুক্ত স্পেকট্রামের প্রয়োজন হয় না।
গ্লোব গত ২৮ আগস্ট তার ফাইবার সহযোগী প্রতিষ্ঠান ফাইবার ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যান্ড নেটওয়ার্ক সার্ভিসেস ইনকর্পোরেটেড (এফআইএনএসআই)-এর মাধ্যমে ঘোষণা দেয়, লেগুনা লেকে তাদের পরীক্ষায় ১১ কিলোমিটার দূরত্বে, যার ৮০ শতাংশ উন্মুক্ত জলাশয়ের ওপর, ১০ গিগাবিট প্রতি সেকেন্ড গতির ওয়্যারলেস অপটিক্যাল সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
অন্যদিকে, পিএলডিটি গত ২ সেপ্টেম্বর রিজাল, ইসাবেলা, এবং কুইজন সিটিতে তিনটি স্থানে এই প্রযুক্তি স্থাপনের ঘোষণা দেয়। ঘোষণায় বলা হয়, প্রথম স্থাপনাগুলো হচ্ছে রিজালের তালিম দ্বীপে, ইসাবেলার দিপালুদায়, এবং কুইজন সিটির বাগং পাগ-আসায়। তালিম দ্বীপে এই প্রযুক্তি লেগুনা দে বে’র উপর দিয়ে ১১.৮ কিলোমিটার দূরত্বে দ্বীপটিকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করছে। ইসাবেলার দিপালুদায়, তারাহা সিস্টেম ১৩ কিলোমিটার দূরত্বের পাহাড়ি ভূখণ্ডে কাজ করছে, যেখানে ফাইবার তার বিছানো ব্যয়বহুল ও লজিস্টিকভাবে চ্যালেঞ্জিং।
পিএলডিটি আরও জানায়, এই প্রযুক্তি অবকাঠামোর খরচে উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় নিয়ে আসে।
এই প্রযুক্তির পেছনে রয়েছে তারা, যা গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেটের মুনশট ল্যাব এক্স থেকে উদ্ভূত। এই এক্স সামাজিক মাধ্যম কোম্পানির সঙ্গে মিলিয়ে ফেরবেন না যেন। অ্যালফাবেটের এক্স ল্যাবে উদ্ভাবনী ও সাহসী প্রকল্পগুলো পরীক্ষা করা হয়, যেমন ওয়েমোর স্বয়ংক্রিয় গাড়ি, যা এই ল্যাবের সফল প্রকল্পগুলোর একটি।
এই লেজার ইন্টারনেট প্রযুক্তি ফিলিপাইনের দুর্গম অঞ্চলে ইন্টারনেট সংযোগের সম্ভাবনা উন্মোচন করছে, যা ঐতিহ্যবাহী ফাইবার অপটিক্সের তুলনায় দ্রুত এবং সাশ্রয়ী সমাধান প্রদান করতে পারে।
সূত্র: র্যাপলার ডট কম
এমএএইচ