বিপিও সম্মেলনে আসছেন জ্যাক মা!

২০২৩ সালের জুন মাসের শেষভাগে এক প্রকার গোপনে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন চীনভিত্তিক ই-কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। ১৬ ঘণ্টার ঝটিকা সফর শেষ করে তিনি সেবার বাংলাদেশ থেকে নেপালে উড়াল দেন। এই ঘটনার ঠিক বছর দুয়েক পরে জ্যাক মা সাড়ম্বরে বাংলাদেশ সফরে আসছেন বলে শোনা যাচ্ছে। আগামী মাসে দেশে অনুষ্ঠ্যেয় বিপিও সম্মেলনে অংশ নিতে জ্যাক মাকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। তারা জানান, জ্যাক মার একটি উপদেষ্টা দল বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। তাদের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে জ্যাক মার সঙ্গে। ইতিবাচক সংকেত পাওয়া গেলে সরকারের মাধ্যমে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হবে। কারণ বিপিও সম্মেলন আয়োজনে সরকারের একাধিক বিভাগ, সংস্থা জড়িত রয়েছে। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এবার জ্যাক মা আসতে পারেন। সেরকম ইঙ্গিত পেয়েই আয়োজকরা উদ্যোগ নিয়েছেন।

সম্প্রতি বিপিও সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে আয়োজকরা এ তথ্য জানান। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আগামী ২১ ও ২২ জুন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আয়োজনে এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল’ও বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) উদ্যোগে এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)-এর কৌশলগত অংশীদারত্বে ষষ্ঠবারের মতো এই সম্মেলন আয়োজন করা হচ্ছে। ঢাকা ক্যান্টমেন্ট এলাকার সেনাপ্রাঙ্গণ (মাটিকাটা টেকপোস্ট সংলগ্ন) ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের বিপিও শিল্পের এই শীর্ষ সম্মেলন বিপিও সামিট বাংলাদেশ। সামিটের এবারের প্রতিপাদ্য বিপিও ২.০: রেভুলেশন টু ইনোভেশন।  

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বাক্কো কার্যনির্বাহী কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুসনাদ-ই-আহমদ বিগত বিপিও সামিটসমূহের কার্যক্রম ও অর্জনের প্রতি আলোকপাত করেন। এরপর অনুষ্ঠিতব্য সামিটের সম্ভাব্য কার্যক্রম ও পরিকল্পনা সম্পর্কে সকলকে অবহিত করা হয় । সামিটে ৩০ টি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক তথ্যপ্রযুক্তি/বিপিও প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও  এবং সেবা প্রদর্শনীতে উপস্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছে। তাই বলা যায়, এবারের সামিট হবে গ্রাহকসেবা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মিলনমেলা। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক ৯টি সেমিনার ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে। আরও জানানো হয়, দেশে এই মুহূর্তে বিপিও খাতে ৮৫ হাজার জনবল কর্মর্ত রয়েছেন। এ বছরের মধ্যে তা ১ লাখে উন্নীত করা হবে। এজন্য বিপিও সম্মেলন চলাকালে আগ্রহীদের সিভি সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া আরও জানানো হয় ২০৩০ সালে এ খাতের লক্ষ্য ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের। বর্তমানে যা রয়েছে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।  

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী জানান, আমরা দেশে পেপাল আনার চেষ্টা করছি। তবে এখনও ইতিবাচক কোনও কিছু হয়নি। তিনি বলেন, আমরা পেপাল যতই অনুরোধ করি দেশে আসার কিন্তু সেই অনুরোধ, আবেদন চলে যায় ভারতের অফিসে। সেখানেই আমাদের অনুরোধ আটকে যাচ্ছে। আমাদের ধারণা পেপালের ভারতের অফিসের কর্মরতরা ভারতীয়, তারাই বাংলাদেশে পেপাল আসার ব্যাপারে বাধা দিয়ে থাকে। তিনি আশাবাদী, সব বাধা কাটিয়ে বাংলাদেশে পেপাল আসবে।   

বাক্কোর সভাপতি তানভীর ইব্রাহীম বলেন, প্রতি বছর ৮৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের আয় করছে। ২০২৫ সালের মধ্যে বাক্কো ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বার্ষিক আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

বাক্কোর সাধারণ সম্পাদক ফয়সল আলিম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য ও সেবা রপ্তানির মাধ্যমে দেশের রপ্তানি আয়কে ত্বরান্বিত করতে ফ্রিল্যান্সারদের অবদান অপরিসীম। সামিটে আয়োজিত সেমিনারের মাধ্যমে আমরা ফ্রিল্যান্সারদের সমস্যাগুলো শুনবো এবং সম্ভাব্য সমাধানগুলো নিয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করবে বাক্কো।

এ আয়োজনকে সফল করতে বাক্কোর সহযোগী হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ), টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) এবং টেলিকম অ্যান্ড টেকনোলজি রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক (টিআরএনবি)।